বৃহস্পতিবার ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
সম্পূর্ণ খবর
Reporter: নিজস্ব সংবাদদাতা | লেখক: Akash Debnath ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ২০ : ০০Akash Debnath
আজকাল ওয়েবডেস্ক: রূপ নিয়ে মানুষের মাথাব্যথার অন্ত নেই। আজকাল ত্বকের জেল্লা বাড়াতে অনেকেই আর কেবল রূপটানে ভরসা রাখতে পারেন না। ঝোঁকের বিভিন্ন ধরনের সাপ্লিমেন্টের দিকে। বিশেষ করে কোলাজেন সাপ্লিমেন্ট এবং গ্লুটাথিয়ন নিয়ে সমাজের একাংশের মারাত্মক আগ্রহ রয়েছে। কিন্তু এই ধরনের ওষুধ কি আদৌ নিরাপদ? কী বলছে চিকিৎসাশাস্ত্র?
এইমস-এর চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ দীপ্র বিশ্বাস আজকাল ডট ইন-কে জানালেন এই ধরনের চিকিৎসার ভালো মন্দ। প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক কাকে বলে কোলাজেন? গ্লুটাথিয়ন-ই বা কী? চিকিৎসক বললেন, "কোলাজেন আসলে এক ধরনের প্রোটিন। এই প্রোটিন ত্বকের ঠিক নিচে থাকা 'ডারমিস' স্তর তৈরিতে সাহায্য করে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের তাপের মতো বিভিন্ন কারণে এই কোলাজেন ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। ফলে ত্বকে বলিরেখা দেখা দেয়, ত্বক কুঁচকে যায়।" আর গ্লুটাথিয়ন? চিকিৎসক জানান, গ্লুটাথিয়ন এক ধরনের 'অ্যান্টি অক্সিডেন্ট মলিকিউল'। আমাদের ত্বক প্রতিদিনই রোদ, ধুলোবালি ও দূষণের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, শরীরে প্রচুর 'রিয়াকটিভ অক্সিজেন' অনু তৈরি হয়। যা সুস্থ কোষকে আক্রমণ করে। ফলে কোষের ক্ষতি হয়। এই কোষগুলিকে বাঁচাতে সহায়তা করে গ্লুটাথিয়ন।
কারা নেন এই ধরনের ওষুধ? চিকিৎসক জানান, আগে ৩০ - ৩৫ পেরোনোর পর মানুষ এই ধরনের উপাদান ব্যবহার করতেন। এখন অনেকেই মধ্য ২০ তেই ত্বক নিয়ে সচেতন। ফলে আজকাল বহু যুবক-যুবতীও এই ধরনের সাপ্লিমেন্ট নেওয়া শুরু করেছেন।
আর এখানেই লুকিয়ে রয়েছে বিপদ। চিকিৎসক জানান, এই ধরনের ওষুধের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার ডেকে আনতে পারে বড় বিপদ। চিকিৎসকের সাফ কথা, "সাধারণত মেলাজমা জাতীয় অসুখের ক্ষেত্রে আমরা গ্লুটাথিয়ন ওষুধ হিসাবে ব্যবহার করি। এই গ্লুটাথিয়ন ইনজেকশন এবং ট্যাবলেট দু ভাবেই পাওয়া যায়। যাঁরা বডি বিল্ডিং করেন তাঁরা অনেক সময় কোলাজেন সাপ্লিমেন্ট হিসাবে নিয়ে থাকেন কিন্তু গ্লুটাথিয়ন কোনও ভাবেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নেওয়া উচিত নয়। এর অনেক ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে না জেনেবুঝে গ্লুটাথিয়ন ইনজেকশন নেওয়ার পর হৃদরোগের মতো গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে।"
তাহলে উপায়? চিকিৎসক সাপ্লিমেন্ট নিতে নিষেধ করছেন না। তবে তাঁর পরামর্শ কেবল সাপ্লিমেন্ট নির্ভর হয়ে পড়লে চলবে না। চিকিৎসক বলেন," বাইরে থেকে শুধু কোলাজেন সাপ্লিমেন্ট বা গ্লুটাথিয়ন নিয়ে যত না উন্নতি হয়, তার থেকে অনেক বেশি উপকার মিলতে পারে খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপন ঠিক করলে। প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাক সব্জি, ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খেলে এমনিতেই শরীরে কোলাজেনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। আবার উল্টোদিকে মদ্যপান, ধূমপান, অতিরিক্ত মানসিক চাপ 'রিয়াকটিভ অক্সিজেন' তৈরি করে। ফলে গ্লুটাথিয়নের প্রয়োজন বেড়ে যায়। কাজেই জীবন যাপন পদ্ধতির উন্নতি ছাড়া কিছুই সম্ভব নয়।"